Selfie: আপাত দৃষ্টিতে সেলফি তোলা ক্ষতিকর না মনে হলেও এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে নিজেকে মুক্ত করুন। না হলে আপনার মধ্যেও সৃষ্টি হতে পারে মানসিক সমস্যা।
সাধারণত দেখতে গেলে সেলফি তোলার কোন ক্ষতিকর প্রভাব আমরা দেখতে পাই না। কিন্তু মনে রাখতে হবে এর একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। আপনাদের সুবিধার জন্য প্রতিবেদনটিতে আমরা একটি উদাহরণ আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
যুক্তরাজ্যের একজন তরুণের নাম হলো ড্যানি বোম্যান। তিনি ঘন্টায় কয়েকটা করে সেলফি তুলেন। যা তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। সেই হিসেবে তিনি প্রতিদিন গড়ে ২০০ করে সেলফি তুলতেন। সারাদিনে প্রায় দশ ঘণ্টা তিনি কাটাতেন মোবাইল ক্যামেরার সামনে। যত দিন না যায় তিনি তত মানসিক সমস্যায় পড়তে থাকেন। কমতে থাকে তার ওজন। যদি তিনি তার মনের মতো কাঙ্খিত Selfie তুলতে না পারেন তাহলে তার মধ্যে সৃষ্টি হয় হতাশা। একসময় তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা ও করেছেন বলে জানা যায়। তবে জানা গেছে ওই সময় তার মায়ের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে যান। তারপরই তাকে মানসিক চিকিৎসার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
তাই সেলফি তোলার ক্ষতিকর প্রভাব না থাকলেও এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অবশ্যই রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের গবেষণার মাধ্যমে তার প্রমাণ মিলেছে, শুধু তাই নয় মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা ও এই বিষয়ে তাদের মত প্রকাশ করেছেন। বি আই ওয়াই হেলথ একাডেমী থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেলফি তোলায় মানুষের মধ্যে আত্মমুগ্ধতা এবং আত্মমগ্নতার সৃষ্টি হয়। তাই কোন মানুষ বার বার নিখুঁত Selfie তোলার চেষ্টা করে থাকে। যার ফলে এটি এক সময় তার নেশায় পরিণত হয়। যদি নিজের নিখোঁজ ছবি তুলতে ব্যর্থ হয়। তাহলে সেক্ষেত্রে অনেক সময় তার মধ্যে সৃষ্টি হয় হতাশা। ওই একই প্রতিবেদনে একজন মনোরোগ চিকিৎসক ডেভিড ভিল বলেছেন, তার কাছে আসার রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগ রোগী ডিসমরফিক ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত।
এটি এমন এক ধরনের রোগ যার ফলে কোন মানুষ নিজের চেহারার খুঁত নিয়ে অনবরত চিন্তায় থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রচুর পরিমাণে Selfie তোলেন ও সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার আপলোড করতে খুব পছন্দ করে। এর ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে তাদের অন্যান্য পরিচিতি যন্ত্রের করা মন্তব্য থেকে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে আনন্দের অথবা রাগের সৃষ্টি হয়।
হাফিংটন পোস্ট এর খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি করা এক গবেষণাতে দেখা গেছে যে সব ব্যক্তিরা অনলাইনে নিজেদের ছবি আপলোড করতে খুব পছন্দ করেন সেইসব ব্যক্তিদের আত্মমুগ্ধতা ও নানা ধরনের মানসিক সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। শুধু তাই নয় ডিআইওয়াই হেলথ একাডেমী থেকে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়েছে, যত দিন যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ বর্তমান দিনে যে ডিজিটাল মাধ্যমে মানুষের জীবনে এতটাই স্থান করে নিয়েছে, যে তারা অবাস্তব লক্ষণ নির্ধারণে প্ররোচিত করছে। আর যদি কোনো কারণে কোনো ব্যক্তির এই লক্ষ্য পূরণ না হয়ে থাকে তাহলে তার মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে হতাশা।
বিশ্বের প্রায় বেশিরভাগ মানুষই এই সামাজিক মাধ্যমে বর্তমান আসক্ত আর সেলফি তোলার সম্পর্কে তো আলাদা করে কিছু বলারই নেই। কারণ সেলফি হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য একটি বড় হাতিয়ার। তবে অনেকে এই রোগ থেকেও নিজেকে উদ্ধার করার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পছন্দ করেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় মানুষ এই বিষয়টিকে পাত্তা না দিয়ে একই রকম ভাবে জীবন কাটাচ্ছে। ফলে তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও গভীর হচ্ছে। তাই আপনাদের সাথে বলে রাখি Selfie তোলার যত কম সময় ব্যয় করা যায় ততই ভালো।
সর্বশেষে বলা যায় সেলফি তোলার পিছনে সময় ব্যর্থ না করে সেই সময়টি আপনি আপনার অন্য কাজে ব্যস্ত থাকুন। তাতে আপনার যেরকম সেলফি তোলা থেকে এবং ফোন থেকে মনোযোগ দূর হবে, তেমনি আপনি এই Selfie তোলার রোগ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারবেন।
এই ধরনের তথ্য সহজ বাংলা ভাষায় পেতে আমাদের টেলিগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হন 👇
আমাদের Facebook পেজ | Follow Us |
আমাদের What’s app চ্যানেল | Join Us |
আমাদের Twitter | Follow Us |
আমাদের Telegram চ্যানেল | Click Here |
আমাদের Instagram | Join Us |
আমাদের LinkedIn | Join Us |
Google নিউজে ফলো করুন | Follow Us |